বাতা সংস্থা ইকনা: কুইবেকের ‘সেইন্টি-ফয়’ শহরে অবস্থিত ‘মনিক-কোরিভিউ’ লাইব্রেরিতে রাখা ‘জীবন্ত বইয়ে’ যে কেউ চাইলে প্রবেশ করতে পারে এবং সরাসরি কুইবেক শহরের বাসিন্দা কিংবা ইসলামে ধর্মান্তরিত মুসলমান ব্যক্তিদের কাহিনী শুনতে পারবে।
ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কারকে চ্যালেঞ্জ করার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে স্থানীয় বিভিন্ন সংস্থা এবং মসজিদসমূহের পাশাপাশি শহরের পাবলিক হেলথ এজেন্সি এই ইভেন্টটি আয়োজন করছে।
নায়লা খলিল নামে একজন স্বেচ্ছাসেবক নারী বলেন, ‘আমি কথা বলার আকাঙ্ক্ষা ও দায়িত্বশীলতার বিষয়টি অনুভব করি। বলতে গেলে, আমাদের ভিন্ন বিশ্বাস রয়েছে কিন্তু আমরা সবাই অন্যের মতো বাস করছি।’
তিনি তার নিজেকে একজন তিউনিসিয়ান, মুসলিম এবং কুইবেকোইস হিসেবে পরিচয় দেন।
ছয় বছর অপেক্ষা করার পর ২০১৬ সালে কানাডিয়ান ভিসা পাওয়ার বিষয়টি স্মরণ করে লায়লা বলেন, ‘আমি সবসময় এখানে আসার স্বপ্ন দেখতাম। ভিসা পাওয়ার বিষয়টি আমার জন্য সত্যিই একটি বিশেষ মুহূর্ত ছিল।’
দুই সন্তানের জননী নায়লা এখন কুইবেক সরকারের একজন কম্পিউটার অ্যানালিস্ট হিসেবে কাজ করছেন।
নায়লা জানায়, গত ২৯ জানুয়ারি কুইবেক সিটি মসজিদ হামলার পর সেখানে কিছু পরিবর্তন এসেছে। ওই হামলায় তার একজন বন্ধু ও একজন প্রতিবেশীসহ ৬ জন নিহত হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘এটা সত্যিই আমাকে বিস্মিত করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় জঘন্য সব মন্তব্য, সংবাদ দেখে আমি হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। এটা সত্যিই একটা কঠিন মুহূর্ত ছিল।’
নায়লা জানায়, মানুষ যেন ইসলামের অর্থকে ভুলভাবে উপস্থাপন করতে না পারে তা নিশ্চিত করতে তিনি এখন মানব গ্রন্থাগারের মতো বিভিন্ন কমিউনিটি কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন।
হিজাব পরার সিদ্ধান্তখাদিজা জাহিদ নামে অন্য আরেকজন নারী জানান, ওই হামলার পর থেকে তিনিও তার দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন এনেছেন।
তিনি বলেন, ‘মহিলাদের হিজাব বা পর্দার বিষয়টি জাতীয় পরিষদ, মিডিয়াসহ সবখানেই একটি আলোচনার বিষয়ে পরিণত হয়েছে। বলা হচ্ছে, এটি কুইবেক সমাজের জন্য বিপজ্জনক এবং এটা আমাকে প্রভাবিত করে কারণ এটি সত্য নয়।’
খাদিজা জাহিদ ২০০৭ সালে মরোক্কো থেকে কুইবেকে অভিবাসী হন এবং কুইবেকের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মানব সম্পদ বিভাগে চাকরি লাভ করেন।
তিনি ২০১১ সাল থেকে হিজাব পরা শুরু করেন।
খাদিজা বলেন, ‘এটা এমন কিছু নয় যা একত্রিত হতে আমার দক্ষতাকে সীমিত করবে। এটি একটি পছন্দ যা আমি নিজেই নিয়েছি। এজন্য কেউ আমাকে বাধ্য করেনি।’
তিনি মনে করেন যে অভিবাসীদের মাধ্যমে আসা বিভিন্ন সংস্কৃতি কুইবেক এবং কানাডিয়ানদের গ্রহণ করা উচিৎ।
খাদিজা বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি কারণ আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। উত্তর আফ্রিকা থেকে আসা অভিবাসীদের বেশিরভাগই মুসলমান এবং তারা তাদের সঙ্গে তাদের ধর্মকে নিয়ে আসবে তা সরকার জানে।’
তিনি প্রস্তাব করেন যে আইনের মাধ্যমে জনসাধারণের মাঝে বিভাজন তৈরির পরিবর্তে সরকারের উচিত হবে উপলব্ধিকে লালন করা এবং একীকরণের ভিত্তি স্থাপন করা। আরটিএনএন