IQNA

মার্কিন ড্রোন হামলায় আল-কায়েদার নেতা নিহত

12:31 - August 02, 2022
সংবাদ: 3472220
তেহরান (ইকনা): মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আজ সকালে আফগানিস্তানের রাজধানীতে এক বিমান হামলায় আল-কায়েদা নেতা নিহত হয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছে। এই খবর প্রকাশের পর সৌদি আরবের স্বাগত জানায়ে এর সত্যতা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ২য় আগস্ট মঙ্গলবার সকালে ঘোষণা করেছে যে, আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে রবিবার মার্কিন ড্রোন হামলায় আফগানিস্তানের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল-কায়েদা নেতা আয়মান আল-জাওয়াহিরিকে হত্যা করেছে।

যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও আল-জাওয়াহিরির হত্যার বিষয়ে তার দাবি প্রমাণ করার জন্য নথি প্রকাশ করেনি। সৌদি আরব প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শিগগিরই এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবেন বলে হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

 

তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আল-কায়েদার মতো নেটওয়ার্কের অস্তিত্ব এবং বিন লাদেন ও আয়মান আল-জাওয়াহেরিদের মতো চরিত্র মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী স্বার্থে সৃষ্টি করা হয় এবং প্রয়োজন ফুরিয়ে যাওয়ার পর তারাই এসব চরিত্রকে ধ্বংস করে ফেলে।

 

হোয়াইট হাউজের একজন কর্মকর্তা দাবি করেছেন, রোববার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে আল-কায়েদার একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে সন্ত্রাস বিরোধী একটি সফল অভিযান পরিচালনা করেছে এবং এতে আয়মান আল-জাওয়াহিরি নিহত হয়েছেন। এতে কোনো বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হননি বলে ওই কর্মকর্তা দাবি করেন।

 

২০১১ সালে বিন লাদেনকে হত্যা করে তার লাশ সাগরে ভাসিয়ে দেয়ার দাবি করে আমেরিকা হোয়াইট হাউজের এ ঘোষণার এক ঘণ্টা আগে তালেবান সরকার এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে যে, কাবুলে পাইলটবিহীন বিমান বা ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে। তালেবান সরকারের মুখপাত্র জবিহউল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতিতে বলেন, রোববার কাবুলের শেরপুর এলাকার একটি বাড়িতে ড্রোন হামলা হয়।তিনি বলেন, যে কারণেই এ হামলা চালানো হয়ে থাক না কেন তা আন্তর্জাতিক আইন ও দোহা চুক্তির লঙ্ঘন এবং কাবুলে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে।

 

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার টুইন টাওয়ারে হামলার পর বিশ্ববাসী প্রথম ব্যাপকভাবে জানতে পারে যে, আল-কায়েদা নামের একটি সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কের অস্তিত্ব আছে এবং তার প্রধান বিন-লাদেন। এরপর ২০১১ সালে বিশ্ববাসী আবার জানতে পারে, পাকিস্তানে মার্কিন অভিযানে আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা ওসামা বিন লাদেন নিহত হয়েছেন। কিন্তু এই অভিযানের কোনো বিশ্বাসযোগ্য ছবি বা ভিডিও প্রকাশ করেনি আমেরিকা।

 

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলার পর বিশ্ববাসী প্রথম আল-কায়েদা ও বিন লাদেনের নাম জানতে পারে

ওসামা বিন লাদেন নিহত হওয়ার পর ২০১১ সালের ১৬ জুন আয়মান আল-জাওয়াহিরিকে আল-কায়েদার নতুন নেতা হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয় এবং সে তথ্যও মার্কিন গণমাধ্যমের সাহায্যে বিশ্ববাসীর জানার সুযোগ হয়। মার্কিন গণমাধ্যম দাবি করেন, ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন জাওয়াহিরি। তাকে ধরিয়ে দিতে আমেরিকা ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে।

 

অথচ এখন ঘোষণা করা হলো, গত ২০ বছর যে কাবুল আমেরিকার দখলে ছিল সেখানেই নিশ্চিন্তে বসবাস করছিলেন জাওয়াহিরি। কাবুলে মার্কিন সেনা মোতায়েন থাকা অবস্থায় তাকে হত্যা করার প্রয়োজন মনে করেনি ওয়াশিংটন। এখন যখন কাবুল তালেবানের দখলে তখন জাওয়াহিরিকে ‘ড্রোন হামলা’ চালিয়ে হত্যা করার নাটক মঞ্চস্থ করা হলো।পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা ও তার দোসর গণমাধ্যমগুলো এভাবেই রাতারাতি দিনকে রাত এবং রাতকে দিন করে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরে।  4075197

 

 

captcha