IQNA

যে আমল পালনের মাধ্যমে গুনাহ ও মন্দ কর্ম থেকে বিরত থাকা সম্ভব

0:25 - December 27, 2016
সংবাদ: 2602243
নামায ইসলামের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আমল। নিয়মিত নামায আদায় ও নামাযের মর্মার্থের প্রতি মনোনিবেশের মাধ্যমে প্রত্যেক ধর্মপ্রাণ মানুষ নিজেকে গুনাহ ও মন্দ কর্ম থেকে বিরত রাখতে পারে।
যে আমল পালনের মাধ্যমে গুনাহ ও মন্দ কর্ম থেকে বিরত থাকা সম্ভব
বার্তা সংস্থা ইকনা: রাসূল (সা.) একটি হাদীসে বর্ণনা করেছেন যে, নামায এমনই এক প্রবাহিত নদী যেখানে বান্দারা প্রতিদিন পাঁচ বার গোসলের মাধ্যমে সব ধরনের নোংরা ও অপবিত্রতা থেকে নিজেদের মুক্ত করে। (সূত্র: মানলা ইয়াহজারহুল ফাকীহ, ১ম খণ্ড, পৃ. ৩১৬)

বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ ও মারজায়ে তাকলীদ হযরত আয়াতুল্লাহ আল উযমা মাকারেম শিরাজী পবিত্র কুরআনের «إنَّ الصلوةَ تنهی عنِ الفحشاء و المنکرِ» (অর্থাৎ নিশ্চয়ই নামায মন্দ ও অন্যায় কর্ম থেকে বিরত রাখে) এ আয়াতের তাফসিরে উল্লেখ করেছেন যে, নামায আদায়কারী ব্যক্তি নামায আদায়ের ক্ষেত্রে যখন এমন বিশ্বাসে উপনীত হয় যে, মহান স্রষ্টা ও পালন কর্তার সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেছে; যিনি সব কিছুর দ্রষ্টা ও নিয়ন্ত্রণ কর্তা। তখন বান্দা আল্লাহ অবাধ্য ও অন্যায় কর্ম থেকে নিজেকে বিরত রাখে।

মু'মিন বান্দা যখন তাকবিরাতুল এহরামের নামায শুরু করে, তখন সে মনে-প্রাণে বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ সর্বোচ্চ ও মহান। আল্লাহর প্রদত্ত অসংখ্য নেয়ামতের কথা স্মরণ করে। তখন সে আল্লাহর দয়া ও অনুগ্রহের কথা স্মরণ করে। একমাত্র তারই নিকট সাহায্য প্রার্থনা করে এবং তারই উপাসনার প্রতিজ্ঞা করে। আর আল্লাহর নিকট সত্য ও সহজ পথের সন্ধান চায় এবং অভিশপ্ত ও পথভ্রষ্টদের পথ থেকে মুক্তি কামনা করে।

মানুষ যখন নামাযের মাধ্যমে আল্লাহর প্রতি এমন সুউচ্চ আকিদা-বিশ্বাস স্থাপন করবে, তখন তার মধ্যে এক স্বর্গীয় ও পবিত্র মন-মানসিকতার সৃষ্টি হবে। নামাযের পবিত্র পরশে মানুষ খোদামুখী ও আত্মিক পরিশুদ্ধির পথে উদ্বুদ্ধ হয়। ফলে তার মধ্যে অন্যায় ও অপকর্মের প্রতি অভ্যান্তরিণভাবে এক ধরনের গভীর ঘৃণার সৃষ্টি হয়। পরিণতিতে সে নিজেকে মন্দ ও গর্হিত কর্ম থেকে মুক্ত রাখবে।

মানুষ নামাযে তাশাহুদ পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর একত্ববাদ এবং রাসূলের (সা.) রিসালাতের প্রতি সাক্ষ্য প্রদান করে। আর এর পরপরই সে সালাম পাঠের মাধ্যমে রাসূল (সা.) ও তার পবিত্র আহলে বাইতের (আ.) প্রতি দরুদ পাঠ করে। এভাবে নামায আদায়ের মাধ্যমে মানুষ মহান আল্লাহ ও রাসূলের (সা.) সাথে দৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলে। আর যখনই কেউ আল্লাহ ও রাসূলের (সা.) সাথে সম্পর্ক গড়তে সক্ষম হবে; তখনই সে খোদামুখী ও গুনাহমুক্ত জীবনকেই বেছে নিবে।

এছাড়া নামায আদায়ের পূর্বশর্ত হচ্ছে ওযু সম্পাদনের মাধ্যমে বাহ্যিক পবিত্রতা অর্জন এবং পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন পোষাকে নামাযের জন্য কিবলামুখী হয়ে দণ্ডায়মান হওয়া। আর যখনই কোন বান্দা এভাবে আল্লাহ দরবারে নামায আদায় করবে এবং নামাযে রুকু ও সেজদাবনত হয়ে আল্লাহর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করবে; তখন নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে সাহায্য করবেন এবং তাকে সব ধরনের অপকর্ম ও অন্যায়ের কলুষতা থেকে নিরাপদ রাখবে এবং শয়তানের প্ররোচনা থেকেও রক্ষা করবেন।

সুতরাং কোন মানুষ যদি নিয়মিত প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত এভাবে নামায আদায় করে, তাহলে কি সে আর অন্যায় ও মন্দ কর্মের মাধ্যমে নিজেকে কলুষিত করতে পারে?
captcha