IQNA

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গম্বুজের মসজিদ টাঙ্গাইলে

0:24 - September 04, 2019
সংবাদ: 2609196
নির্মাতাদের দাবি, টাঙ্গাইলের ২০১ গম্বুজ মসজিদ বিশ্বের সবচেয়ে বেশি গম্বুজবিশিষ্ট এবং দ্বিতীয় উচ্চতম মিনারের মসজিদ হতে যাচ্ছে। ১৫ বিঘা জমির ওপর মসজিদটি নির্মিত হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে।

বার্তা সংস্থা ইকনা'র রিপোর্ট: টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামে ঝিনাই নদীর তীরে নির্মিতব্য মসজিদটির ইটের তৈরি মিনারের উচ্চতা হবে ৪৫১ ফুট যা ৫৭ তলা ভবনের সমান।

২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের মা রিজিয়া খাতুন।

মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের ভাই নির্মাণাধীন মসজিদের তত্ত্ববাধায়ক মো. হুমায়ুন কবির জানান, প্রায় ১৫ বিঘা জমির ওপর মসজিদ কমপ্লেক্সে থাকবে অত্যাধুনিক সব সুবিধা। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ার পরও মসজিদে সহস্রাধিক ফ্যান লাগানো হবে।

তিনি জানান, মসজিদের ছাদের মাঝখানে থাকবে ৮১ ফুট উচ্চতার একটি বড় গম্বুজ। এর চারপাশে থাকবে ১৭ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ২০০টি গম্বুজ। মূল মসজিদের চার কোণে থাকছে ১০১ ফুট উচ্চতার চারটি মিনার। পাশাপাশি থাকবে ৮১ ফুট উচ্চতার আরও চারটি মিনার। ১৪৪ ফুট লম্বা ও একই মাপের প্রস্থের দোতলা মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারবেন একসঙ্গে প্রায় ২০ হাজার মুসল্লি।

মসজিদের দেয়ালে টাইলসে অঙ্কিত থাকবে ৩০ পারা পবিত্র কুরআন শরীফ। যে কেউ বসে বা দাঁড়িয়ে কুরআন তেলাওয়াত করতে পারবেন। আর মসজিদের প্রধান দরজা তৈরিতে ব্যবহার করা হবে ৫০ মণ পিতল। আজান প্রচারের জন্য মসজিদের দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করা হবে উঁচু মিনার। উচ্চতার হিসেবে মিনারটি হবে ৫৭ তলা ভবনের সমান অর্থাৎ ৪৫১ ফুট। মিহরাবের দুই পাশে লাশ রাখার জন্য হিমাগার তৈরি করা হবে। নির্মাণাধীন অবস্থাতেই ২০১ গম্বুজ মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় শুরু হয়েছে।

মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করা হচ্ছে পৃথক দুটি পাঁচতলা ভবন। সেখানে থাকবে দুস্থ নারীদের জন্য বিনামূল্যের হাসপাতাল, এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা। মসজিদের উত্তর পাশের ভবনটি দেশি-বিদেশি অতিথিদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থার জন্য।

মসজিদের পাশেই নির্মাণ করা হবে দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসুল্লিদের জন্য ডাক বাংলো ও বিনামূল্যে খাবার বিতরণের ব্যবস্থা। পশ্চিমের ঝিনাই নদীর তীর থেকে মসজিদ পর্যন্ত সিঁড়ি করা হবে। একটি সেতু নির্মাণ করা হবে নদীর ওপর। চারপাশে থাকবে দেশি-বিদেশি ফুলের বাগান।

হুমায়ুন কবির বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির নির্দেশে সম্পূর্ণ শুল্কমুক্তভাবে বিদেশ থেকে এই মার্বেলপাথর আনা হয়েছে। ১৫ কোটি টাকা হাতে নিয়ে মসজিদের কাজ শুরু করা হয় এবং এ পর্যন্ত মসজিদের নির্মাণ কাজে ব্যয় হয়েছে ১০০ কোটি টাকার উপরে।

তিনি জানান, চলতি বছরের শেষদিকে নির্মাণকাজ শেষ হবে। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পবিত্র কাবা শরীফের ইমামকে এনে মসজিদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ লক্ষ্যে নির্মাণ করা হয়েছে দুটি হেলিপ্যাড।

মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বলেন, ব্যয়বহুল এই নির্মাণকাজটি শুরু করা হয়েছিল অল্প অর্থ হাতে নিয়ে। পরে এর পরিকল্পনা দেখে অনেকে এগিয়ে এসেছেন।নির্মাণ পর্যায়েই এটি সাধারণের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। স্থাপনাটি দেখতে প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভিড় করছেন দর্শনার্থীর।

বাংলাদেশসহ বিশ্বের মসজিদের ইতিহাসে জায়গা করে নিতে যাচ্ছে নির্মানাধীন ঐতিহাসিক ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি। এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটক ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আগমন ঘটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

captcha