IQNA

রোহিঙ্গাদের নিয়ে দলবাজি না করার আহ্বান নাসিমের, 'মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ান'

0:25 - September 04, 2019
সংবাদ: 2609195
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে দলবাজি না করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম।

বার্তা সংস্থা ইকনার রিপোর্ট: গতকাল (সোমবার) পরলোকগত ন্যাপ নেতা মোজাফ্ফর আহমেদের স্মরণে রাজধানীতে ১৪ দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, “রোহিঙ্গা ফেরত নেয়ার ব্যাপারে সব রাজনৈতিক দলকে অনুরোধ করব ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের সহযোগিতা করুন। এখানে আমরা দলবাজি করতে চাই না। আমরা চাই সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করি”

এ সময় নাসিম বিশ্ব সম্প্রদায়কে মিয়ানমারের উপরে চাপ সৃষ্টি করা এবং রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেন।

রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে গত বছর ১৫ নভেম্বর ও চলতি বছরের ২২ আগস্ট দু’দফা প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ত্রাণ, শরণার্থী ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ আবুল কালাম জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের অসম্মতির কারণে তাদের আমরা ফেরত পাঠাতে পারি নাই। সামনে আমাদের অগ্রাধিকার হবে কিভাবে দ্রুত একটা টেকসই প্রত্যাবাসন কাজ শুরু করতে পারি।'

তবে, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন যখনই করা হোক না কেন, মিয়ানমারের সাথে দর কষাকষির আলোচনায় রোহিঙ্গাদের অংশগ্রহণের দাবি করেছেন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস ও হিউম্যান রাইটসের সভাপতি মহিবুল্লাহ।

রোহিঙ্গা নেতা মহিবুল্লাহ বলেন, 'প্রত্যাবাসনের আলোচনায় আমাদের অন্তর্ভুক্ত করা হলে আমরা বাস্তবতা তুলে ধরতে পারব। তাতে মিয়ানমারের ওপর চাপ আরও বাড়বে।'

সর্বশেষ প্রাপ্ত খবরে জানা যায়, উখিয়া-টেকনাফে ৭টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ প্রত্যাহার করা হয়েছে। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সরকারিভাবে জনস্বার্থে তাদের প্রত্যাহারের কথা বলা হলেও স্থানীয় সূত্রগুলো বলছে, সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ ব্যর্থ হওয়ার জন্য পরোক্ষভাবে তাদের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ আছে।

এর আগে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিতর্কিত কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে ৪১টি এনজিওকে সব ধরনের কার্যক্রম থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

রোহিঙ্গাদের অপরাধ প্রবণতা

এদিকে, গত দুই বছরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ কক্সবাজার এলাকায় ৩৩ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, নিহত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ছাড়াও হত্যা, ডাকাতি, মাদক পাচার, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও মুক্তিপণ আদায়ের মতো অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

রেহিঙ্গাদের মাঝে এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে স্থানীয় জনগোষ্ঠীও আতঙ্কিত। রোহিঙ্গাদের মাঝে কর্মরত এনজিওদেরকে তারা অস্ত্র সরবরাহের দায়ে অভিযুক্ত করছেন।

এ অবস্থায় রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে অপরাধ ঠেকাতে নিরাপত্তা আরও জোরদারের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সেজন্য নতুন করে দুই ব্যাটালিয়ন আর্মড পুলিশ মোতায়েনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। একই সঙ্গে অপরাধপ্রবণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাম্পগুলোর চারপাশে তিন ফুট উচ্চতার কাঁটাতারের বেষ্টনী নির্মাণ করারও প্রক্রিয়া চলছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র।

তাছাড়া, রোহিঙ্গাদের মাঝে অপরাধমূলক কার্যক্রম ঠেকাতে সব ধরণের মোবাইল সেবা বন্ধ করতে মোবাইল অপারেটরগুলোকে জরুরি নির্দেশ পাঠিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা- বিটিআরসি।

বিটিআরসির উপ-পরিচালক নাহিদুল হাসান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের শুরু থেকেই মোবাইল ফোন সুবিধা না দিতে সব মোবাইল অপারেটরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে নির্দেশনা দেয়া সত্বেও রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সিম ও রিম ব্যবহৃত হচ্ছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে। এ বিষয়ে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সিম বিক্রি বন্ধ এবং মোবাইল ফোন সুবিধা না দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে সব মোবাইল অপারেটরকে জরুরি নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পার্সটুডে

captcha